রংপুর জেলার গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নে অবস্থিত বেতগাড়ী জহিরোন নেছা নূরাণী হাফিজিয়া ও ক্বওমী মাদ্রাসায় আশুরা ও মুহাররমের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৬ জুলাই ) বেলা ১২ ঘটিকায় উক্ত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ছায়াসুনিবির মনোরম পরিবেশে বেতগাড়ীর জুম্মাপাড়ার স্থাপিত বেতগাড়ী জহিরোন নেছা নূরাণী হাফিজিয়া ক্বওমী মাদ্রাসায় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন সরকার আশুরা ও মুহাররমের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন,হিজরি সনের সঙ্গে মুসলমানদের বিশেষ ঐতিহ্য নিহিত রয়েছে। যদিও হিজরতের সময়কাল থেকে হিজরি সন বা চান্দ্রবর্ষ গণনা আরম্ভ হয়, কিন্তু এ পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে চান্দ্রমাসের গণনা শুরু হয়েছে। আসমান ও জমিন সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে আল্লাহর কাছে মাস গণনায় মাস ১২টি, তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত, এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার কোরো না।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত: ৩৬,
আরবি চান্দ্রবর্ষ তথা হিজরি সনের প্রথম মাস হলো মহররম। ‘মহররম’ শব্দের অর্থ অলঙ্ঘনীয় পবিত্র। ইসলামে মহররম মাসটি অত্যন্ত মর্যাদাবান ও ফজিলতময়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা যে চারটি মাস সম্মানিত বলে ঘোষণা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর মুখ নিঃসৃত অমিয় বাণীর মাধ্যমে তা সুস্পষ্ট ও নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। বিদায় হজের ভাষণে সম্মানিত মাসগুলোকে চিহ্নিত করে তিনি বলেছেন, ‘তিনটি মাস হলো ধারাবাহিক জিলকদ, জিলহজ ও মহররম, অপরটি হলো রজব।’ (বুখারি)
১০ তারিখ আশুরার সঙ্গে পুরো মহররম মাসের বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদা রয়েছে। রমজান মাসের রোজা ফরজ হওয়ার আগে পবিত্র আশুরার দিনে রোজা রাখা ফরজ ছিল। পরে তা রহিত করে মাহে রমজানের রোজা ফরজ করা হয়। ইসলাম-পূর্বকালে বিভিন্ন জাতি নানা কারণে আশুরার দিন রোজা রাখত।
রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় হিজরত করে দেখতে পেলেন যে ইহুদিরা মহররমের ১০ তারিখ আশুরা দিবসে রোজা রাখছে। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘এটা কোন দিন যাতে তোমরা রোজা রেখেছ? তারা বলল, এটা এমন এক মহান দিবস, যেদিন আল্লাহ তাআলা হজরত মুসা (আ.) ও তাঁর সম্প্রদায়কে নাজাত দিয়েছিলেন, ফিরআউনকে তার সম্প্রদায়সহ ডুবিয়ে মেরেছিলেন। তাই হজরত মুসা (আ.) শুকরিয়া হিসেবে এদিন রোজা রেখেছেন, এ জন্য আমরাও রোজা রাখি। এ কথা শুনে নবী করিম (সা.) বললেন, ‘তোমাদের চেয়ে আমরা হজরত মুসা (আ.)-এর অধিকতর ঘনিষ্ঠ ও নিকটবর্তী।’ অতঃপর তিনি রোজা রাখলেন এবং অন্যদের রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।’ (বুখারি ও মুস) তাই প্রতিটা মুসলমানের উচিৎ ফযিলতপূর্ণ মহররম মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বোঝা এবং আমল করা।
মহররমের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাাতা সভাপতি রংপুর গ্রুপ এর পরিচালক আলহাজ্ব মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন সরকার, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলানা এটি এম আব্দুল হক,পরিচালক মুফতি হাসিবুল্লাহ্ হামিদি। সহসাধারণ সম্পাদক মুদাচ্ছের হোসেন লেবু, অর্থ সম্পাদক মাওলানা মোবাশ্বের হোসেন বুলবুলসহ, মাদ্রাসার শিক্ষক ও অন্যান্যরা।