গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সিরাজুল ইসলাম সিরাজের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিবন্ধন ও সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। দলের ভেতর থেকেই অভিযোগ ওঠায় সম্প্রতি টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছেন এই জামায়াত নেতা। বিষয়টি নিয়ে উপজেলাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সিরাজুল ইসলাম ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুই প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেন। এর মধ্যে দমোদরপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মাসুদ রানার কাছ থেকে নেন ৫০ হাজার টাকা এবং আরেক ভুক্তভোগী আব্দুল হাদীর কাছ থেকে নেন ১৫ হাজার টাকা।
কিন্তু প্রার্থীরা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন সিরাজুল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা গত ২ আগস্ট উপজেলা ও জেলা জামায়াত আমিরের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। চাপের মুখে দলীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় গত ৬ আগস্ট সাদুল্লাপুর জামায়াত কার্যালয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন সিরাজুল। মাসুদ রানা নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করে বিষয়টি নিশ্চিত করলে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
শুধু শিক্ষক নিবন্ধন নয়, সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রায় ১৭ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে তাকে টাকা লেনদেনের বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়।
এছাড়াও, সম্প্রতি জামালপুর ইউনিয়নের পাতিল্যাকুড়া গ্রামের বাসিন্দা মফিজল হক অভিযোগ করেছেন, সিরাজুল ইসলাম তার ছেলেকে অপহরণের চেষ্টা করেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. রোকনুজ্জামান রোকন জানান, তারা সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে তিনটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন এবং এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য একটি মহল তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। টাকা লেনদেনের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি কেবল মধ্যস্থতা করেছেন এবং কোনো টাকা নেননি।