জুবিন গর্গের লেখা এবং গাওয়া ‘জীবনের রঙ’ গানটি এখন আসামের (অসম) মানুষের বাঁচার অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করছে। বলা যায়, এই গানটিই এখন অসমীয়াদের সামনে এগিয়ে চলার মন্ত্র। রাজ্যের সর্বত্র, আপামর জনসাধারণের কণ্ঠে এখন কেবলই ‘জীবনের রঙ’ সুরটি শোনা যায়। জুবিন গর্গ যেন তাঁর সঙ্গীতের মাধ্যমে আসামের মানুষদের জাগিয়ে রেখেছেন। একজন শিল্পী, একজন মানুষ কতটা মানুষের কাছাকাছি গেলে, তাঁদেরকে বুকে টেনে নিলে ঈশ্বর হয়ে ওঠা যায়, জুবিন গর্গ যেন তারই প্রতিচ্ছবি।
গানটির কথাগুলি যেন জীবনের এক গভীর সত্যকে সহজভাবে তুলে ধরেছে। এটি কেবল একটি গান নয়, বরং প্রতিটি হতাশ মুহূর্তের জন্য এক সঞ্জীবনী সুধা।
এখানে গানটির সেই অনুপ্রেরণামূলক অংশটি তুলে ধরা হলো:
“যদি জীবনের রঙ লুকোচুরি খেলে,
আশার প্রদীপটি নিভু নিভু জ্বলে,
তবুও বন্ধু এগিয়ে যাবে—
তবুও বন্ধু এগিয়ে যাবে—
পেছন ফিরে আর তাকাবে না।”
এই অংশটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে অন্ধকারই শেষ কথা নয়, কঠিন পরিস্থিতিতেও আমাদের মনোবল ধরে রাখতে হবে।
“যদি চাঁদ-তারা আকাশে মুখ লুকায়,
যদি রোদও নীল গগনে না হাসে তায়,
তবুও বন্ধু মনোবল রাখো,
তবুও বন্ধু মনোবল রাখো,
শেষে সবই তুমি পাবে নিশ্চয়।”
আমাদের জীবন নানা রঙে ভরা। সেখানে যেমন সুখ আছে, তেমনই দুঃখের ছায়াও অনস্বীকার্য। আমরা মরীচিকার পেছনে ছুটি, হাহাকার করি, দিনের পর দিন এই জীবন-মরুভূমি বয়ে চলি। কিন্তু, জীবনের পথে যতই আঘাত-প্রতিঘাত আসুক না কেন, রাতের শেষে যেমন ভোরের আলো আসে, তেমনই জীবনের এই নাটকে শেষে সবকিছুই পাওয়া যায়, আর ওপারেই মেলে শান্তির এক স্নিগ্ধ ছায়া। একজন শিল্পী যখন তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে একটি গোটা জনপদকে এমনভাবে জাগিয়ে তোলেন, তখন তিনি শুধু শিল্পী থাকেন না, হয়ে ওঠেন জনমানুষের আশ্রয় ও প্রেরণা।
-লেখক: কবি, সাংবাদিক, আবৃত্তিকার ও বাচিক শিল্পী