‘১১ জনের বিপক্ষে পুরো দেশ’-ক্ষোভে ফুঁসছেন কোহলিরা
স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৯:২৭ এএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২২
‘১১ জনের বিপক্ষে পুরো দেশ’-ক্ষোভে ফুঁসছেন কোহলিরা
ভারতের হাতে বেশি রান নেই। ম্যাচ জিততে হলে উইকেট নিতেই হবে। এর মধ্যে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগার। এমনই এক এলবিডব্লিউ, যা কিনা খালি চোখে স্ট্যাম্প আঘাত করতো বলেই মনে হচ্ছিল। আম্পায়ার আউটও দিয়েছিলেন।
কিন্তু রিভিউ নিয়ে জিতে যায় প্রোটিয়ারা। যে রিভিউ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ভারতীয়দের মধ্যে। প্রকাশ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকান ব্রডকাস্টার সুপার স্পোর্টসের টেকনোলজি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। যার মধ্যে আছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলিও।
ঘটনার সূত্রপাত প্রোটিয়াদের দ্বিতীয় ইনিংসের ২১তম ওভারে। ২১২ রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ১ উইকেট হারিয়ে তুলে ফেলেছে ৬০ রান। তখনই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল গিয়ে আঘাত হানে এলগারের প্যাডে। ভারতের এলবিডব্লিউর আবেদনে ইতিবাচক সাড়াও দেন আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার রিভিউতে বল ট্র্যাকিংয়ের সময় দেখা যায় ডেলিভারিটা চলে যেতো স্টাম্পের ওপর দিয়ে।
এই বল ট্র্যাকিং টেকনোলজি মূলত পরিচালনা করে হক আই নামের একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান, যারা সম্প্রচারকারীদের ডেটা দিয়ে থাকে। সুপারস্পোর্টও তাদের সাহায্য নিয়েই ম্যাচে আম্পায়ারদের সাহায্য করছে।
কিন্তু কোহলিদের মনে লেগে গেছে সন্দেহ। বিরক্ত কোহলিকে স্ট্যাম্প মাইক্রোফোনে বলতে শোনা গেছে, ‘নিজেদের দল যখন বল চকচকে বানায়, তখন তাদের ওপর মনোযোগ দাও, প্রতিপক্ষের ওপর নয়। সবসময় লোকজনকে ধরার চেষ্টা চলছেই।’
The bounce of the pitch – a significant factor in Dean Elgar's successful review.#SAvIND pic.twitter.com/GI2rXjgjwd
— SuperSport 🏆 (@SuperSportTV) January 13, 2022
কোহলি একা নন অবশ্য, একটু পর ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে বলতে শোনা যায়, ’১১ জন মানুষের বিরুদ্ধে পুরো দেশ লেগে গেছে!’ অশ্বিন তো সরাসরিই আক্রমণ করেছেন ব্রডকাস্টারদের। তার পরিষ্কার কথা, ‘জেতার জন্য আরও ভালো একটা উপায় খুঁজে বের করা উচিত ছিল, সুপারস্পোর্ট!’
শুধু ভারতীয় খেলোয়াড়রাই নন। রিভিউয়ের রিপ্লে দেখে অবাক আম্পায়ার ইরাসমাসও। মাঠের বড় স্ক্রিনে বল স্ট্যাম্প মিস করার রিপ্লে দেখে মাথা নাড়িয়ে তিনি বলছিলেন, ‘এটা অসম্ভব!’
তবে স্বভাবতই এই রিভিউয়ের পক্ষে কথা বলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের খেলা শেষে লুঙ্গি এনগিদিকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, ডিআরএস প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দিতে পারছে কি? তার উত্তর ছিল, ‘হ্যাঁ’।
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রোটিয়া পেসার বলেন, ‘আমরা বিশ্বজুড়ে অনেকবারই এটার ব্যবহার দেখেছি। এটা এখন সময়ের দাবি। এজন্যই আমরা ক্রিকেটাররা এটা ব্যবহার করছি।’
অবশ্য ভারতীয়দের ক্ষোভ অসন্তোষ স্পষ্ট ছিল তৃতীয় দিনের পুরোটা সময়ই। দিনের শেষ বলে জাসপ্রিত বুমরাহর লেগ স্টাম্পের বাইরে করা বলটা খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ হয়েছেন বিতর্কিত রিভিউয়ে বেঁচে যাওয়া এলগার।
ওই সময়ও আম্পায়ার আদ্রিয়ান হোলস্টক আউট দেননি, রিভিউ নেয় ভারত। তখনই কোহলি স্টাম্প মাইকের কাছে এসে আবারও বলেন, ‘এবার কীভাবে এটা দেখাবে কে জানে!’
যদিও এবার আর হতাশ হতে হয়নি কোহলিদের। আলট্রাএজে দেখা মেলে স্পাইকের, তাতেই সাজঘরে ফিরেছেন এলগার। সঙ্গে সঙ্গে দিনের শেষ ঘোষণা করেন দুই আম্পায়ার। দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করেছে ১০১ রানে। বাকি ৮ উইকেটে তাদের করতে হবে আরও ১১১ রান।
দুই দলেরই জেতার সম্ভাবনা আছে। চতুর্থ দিনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াই আরও আগুনে রুপ নেবে, আন্দাজ করাই যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ভদ্রলোকের খেলাটা ভদ্রতার পর্যায়ে থাকলেই হয়!