জয়ের আশায় গোরস্থানে জমি দান করে ফিরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পরাজিত এক ইউপি সদস্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দাইপুকুরিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে এমন ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচন চলাকালে দারিগাছা কেন্দ্রীর গোরস্থানে ২ কাঠা জমি দেওয়ার কথা বললেও ভোটে পরাজিত হয়ে এখন সেই জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করছেন তিনি। এতে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
তবে পরাজিত প্রার্থী বলছেন, ‘আমার কোনো জমি দেওয়ার কথা ছিল না।’
ভোটে হেরে গোরস্থানের জমি ফিরিয়ে নিলেন প্রার্থী
জানা যায়, তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার দাইপুকুরিয়া ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এতে ৬নং ওয়ার্ডে ফুটবল প্রতীক নিয়ে মো. তসলিম উদ্দিন ৫১০ ভোঠ পেলেও মোরগ মার্কা নিয়ে আব্দুল আজিজ পান ১৫৮৭ ভোট।
দারিগাছা কেন্দ্রীর গোরস্থানের সাধারণ সম্পাদক হারুনার রশীদ জানান, আমরা এই গোরস্থানটি ২০০৯ সালে নির্মাণ করি স্থানীয় মানুষের জন্য। তখন থেকেই আমরা আশপাশের জমি কিনে এই গোরস্থানটি বড় করি। কিন্তু গোরস্থানে প্রবেশের জন্য কোনো রাস্তা ছিল না। তাই তসলিম উদ্দিন নির্বাচনের সময় গোরস্থানে প্রবেশের জন্য দুই কাঠা জমি দিতে চান। সেই জমি নিয়ে আমরা পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মাটি কিনে গোরস্থানে প্রবেশের রাস্তাটি প্রস্তুত করি। কিন্তু নির্বাচনে পরাজিত হয়ে এখন তিনি জমি দিতে চাচ্ছেন না। এখন আমরা তার কাছ থেকে জমিটুকু কিনতে চাচ্ছি। কিন্তু আশপাশের জমির মূল্য ৩০-৩৫ হাজার টাকা কাঠা হলেও তিনি দাম চাচ্ছেন ৪ লাখ টাকা।
রজিনা বেগম নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, আমি নির্বাচনের আগেই শুনেছি দারিগাছা কেন্দ্রীয় গোরস্থানে রাস্তা নির্মণের জন্য তসলিম উদ্দিন ২ কাঠা জমি দান করেছেন। তাই আমরা খুশিতে তাকে ভোট দিয়েছি। কিন্তু নির্বাচনের কয়েকদিন পরই শুনছি তিনি সেই জমি আর দান করবেন না। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে এমনটা করা তার ঠিক হয়নি।
ভোটে হেরে গোরস্থানের জমি ফিরিয়ে নিলেন প্রার্থী
স্থানীয় আলো বাজারের এক মুদি দোকানি বলেন, আমরা সবাই নির্বচনের ১০ দিন আগে থেকেই অবগত রয়েছি যে তসলিম উদ্দিন গোরস্থানে ২ কাটা জমি দান করেছেন।নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়েও তিনি জমি দানের কথা প্রচার করেছেন। কিন্তু এখন তিনি উল্টো কথা বলছেন।
এ বিষয়ে পরাজিত মেম্বার প্রর্থী তসলিম উদ্দিন বলেন, আমি গোরস্থানে জমি দানের কথা বলিনি। এ সময় ক্যামেরা বন্ধ করার চেষ্টা করেন তিনি। বার বার বলেন এ রিপোর্ট কেন করবেন এসেছেন চা খেয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দাইপুকুরিয়া ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মরজেম আলী জানান, ভোটের আগে আমিও শুনেছি এলাকাবাসীর গোরস্থানে প্রবেশের জন্য তিনি দুই কাঠা জমি দান করেছিলেন। তবে এখন অস্বীকার করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বি জানান, এমন কোনো অভিযোগ আমি পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।